ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে পুলিশ সদস্যদের মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ সালথায় চলাচলের পথে ঘর নির্মানে প্রতিবেশির পথ বন্ধের অভিযোগ সদরপুরে ধর্ষণ ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার -২ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান অতপর: ৩২ জন ডাক্তারের ১০ জনই অনুপস্থিত সালথায় ৭০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী রমজান গ্রেপ্তার ফরিদপুরে একাধিক চিরকুট লিখে মেয়ের শ্বশুরকে দায়ী করে ঠিকাদারের আত্মহত্যা ফরিদপুরে বাড়িঘরে অগ্নিকান্ড ও লুটপাট, পালিয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিত নারী ফরিদপুরে নিষিদ্ধ হওয়া আ.লীগের ২১ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ ফরিদপুরে বিক্রি হওয়া শিশু তানহাকে দেয়া হলো মায়ের জিম্মায়, আগামী ২ জুন শুনানি

ফরিদপুরে নিরাপত্তা চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবাদ সম্মেলন, মামলা নিচ্ছেনা পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুস্কৃতিকারীদের অপকর্মের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ার জেরে এবং চক্রটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করায়
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আরাফাত মোল্যা মনি (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ওই যুবকের পরিবার। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুরে একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ তুলে ধরেন ওই যুবকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজ টুকু মোল্যা। এ সময় তার মা হোসনে আরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লুকদি গ্রামের বাসিন্দা।

এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে বাড়ির পাশে আরাফাতকে দেশীয় অস্ত্র টেটা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে একই এলাকার সাখাওয়াত মোল্লা (৪০), রুবেল মোল্লা (৩০), ইমরান মোল্লা (৩০) সহ কয়েকজন। তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নেয়া হয়। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসা নেন।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা আজিজ টুকু মোল্যা বলেন, আমার ছেলে মনি মোল্লার উপর হামলার ঘটনার বিষয়টি ভাঙ্গা থানার ওসিকে মোবাইলে অবগত করা হয়। এতে ওসি সাহেব তাকে জানায় আগে ছেলেকে চিকিৎসা করুন, তারপর থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনার ৩-৪ দিন পর আমি ভাঙ্গা থানায় যাই এবং ওসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করি। তিনি আমাকে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দিতে বলেন। কিন্তু অভিযোগটি মামলায় রুজু না করে গড়িমসি শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমি বিষয়টি ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল সাহেবকে জানাই। এরপর গত ৯ মার্চ এসপি সাহেব ঘটনাটি শুনেই গুরুত্বের সাথে ভাঙ্গা থানার ওসি আশরাফ হোসেনকে মোবাইলে মামলটি রুজু করতে নির্দেশনা প্রদান করেন।

এরপর ভাঙ্গায় গিয়ে আমি ওসির সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু ওসি সাহেব এসপি সাহেবের হুকুম অমান্য করে মামলা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন এবং ফরিদপুর কোর্টে গিয়ে মামলা করতে বলেন। এতে আমি ওসি সাহেবকে অনুরোধ জানাই আমার ছেলের উপরে হামলার বিচারের জন্য আমি আপনার সহায়তা কেন পাবো না জানতে পারি। তখন তিনি আমাকে জানায় আপনি বয়স্ক মানুষ এসব মামলায় না জড়ানোই আপনার জন্য ভালো হবে। অন্যথায় আপনার ক্ষতি হবে। এরপর তিনি আমার সঙ্গে খুব তুচ্ছতাচ্ছিল্য ব্যবহার করে অপমানজনক ভাষায় কথা বলেন ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয়ভিতি প্রদর্শন করেন আমাকে।

তিনি আরও বলেন, মামলা না হওয়ায় হামলাকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমি ও আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাই আমি ও আমার পরিবার মারাত্বক বিষন্নতায় ভুগছি।  বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে একটি ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।

আহত যুবক আরাফাত বলেন, আমার ওপর হামলাকারীরা এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ অপকর্ম করে আসছে। ভয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। গত মাসে ঢাকায় কাফরুল থানা এলাকায় চোট পার্টির সদস্য হিসেবে অভিযান চালিয়ে একজনকে পুলিশে আটক করে। ওই অভিযানের একটি ভিডিও আমি ফেসবুকে পোস্ট দিই। তখন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর থেকেই ওরা আমাকে মারার পরিকল্পনা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। থানায় এলে মামলা নেব না কেন। যে কেউ থানায় মামলা করতে পারে। এছাড়া উনারা কোর্টে মামলা করবে বলে আমাকে জানিয়েছিলেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৯:১৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
৫৩ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরে নিরাপত্তা চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবাদ সম্মেলন, মামলা নিচ্ছেনা পুলিশ

আপডেট সময় ০৯:১৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

দুস্কৃতিকারীদের অপকর্মের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ার জেরে এবং চক্রটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করায়
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আরাফাত মোল্যা মনি (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ওই যুবকের পরিবার। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুরে একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ তুলে ধরেন ওই যুবকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজ টুকু মোল্যা। এ সময় তার মা হোসনে আরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লুকদি গ্রামের বাসিন্দা।

এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে বাড়ির পাশে আরাফাতকে দেশীয় অস্ত্র টেটা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে একই এলাকার সাখাওয়াত মোল্লা (৪০), রুবেল মোল্লা (৩০), ইমরান মোল্লা (৩০) সহ কয়েকজন। তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নেয়া হয়। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসা নেন।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা আজিজ টুকু মোল্যা বলেন, আমার ছেলে মনি মোল্লার উপর হামলার ঘটনার বিষয়টি ভাঙ্গা থানার ওসিকে মোবাইলে অবগত করা হয়। এতে ওসি সাহেব তাকে জানায় আগে ছেলেকে চিকিৎসা করুন, তারপর থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনার ৩-৪ দিন পর আমি ভাঙ্গা থানায় যাই এবং ওসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করি। তিনি আমাকে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দিতে বলেন। কিন্তু অভিযোগটি মামলায় রুজু না করে গড়িমসি শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমি বিষয়টি ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল সাহেবকে জানাই। এরপর গত ৯ মার্চ এসপি সাহেব ঘটনাটি শুনেই গুরুত্বের সাথে ভাঙ্গা থানার ওসি আশরাফ হোসেনকে মোবাইলে মামলটি রুজু করতে নির্দেশনা প্রদান করেন।

এরপর ভাঙ্গায় গিয়ে আমি ওসির সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু ওসি সাহেব এসপি সাহেবের হুকুম অমান্য করে মামলা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন এবং ফরিদপুর কোর্টে গিয়ে মামলা করতে বলেন। এতে আমি ওসি সাহেবকে অনুরোধ জানাই আমার ছেলের উপরে হামলার বিচারের জন্য আমি আপনার সহায়তা কেন পাবো না জানতে পারি। তখন তিনি আমাকে জানায় আপনি বয়স্ক মানুষ এসব মামলায় না জড়ানোই আপনার জন্য ভালো হবে। অন্যথায় আপনার ক্ষতি হবে। এরপর তিনি আমার সঙ্গে খুব তুচ্ছতাচ্ছিল্য ব্যবহার করে অপমানজনক ভাষায় কথা বলেন ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয়ভিতি প্রদর্শন করেন আমাকে।

তিনি আরও বলেন, মামলা না হওয়ায় হামলাকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমি ও আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাই আমি ও আমার পরিবার মারাত্বক বিষন্নতায় ভুগছি।  বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে একটি ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।

আহত যুবক আরাফাত বলেন, আমার ওপর হামলাকারীরা এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ অপকর্ম করে আসছে। ভয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। গত মাসে ঢাকায় কাফরুল থানা এলাকায় চোট পার্টির সদস্য হিসেবে অভিযান চালিয়ে একজনকে পুলিশে আটক করে। ওই অভিযানের একটি ভিডিও আমি ফেসবুকে পোস্ট দিই। তখন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর থেকেই ওরা আমাকে মারার পরিকল্পনা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। থানায় এলে মামলা নেব না কেন। যে কেউ থানায় মামলা করতে পারে। এছাড়া উনারা কোর্টে মামলা করবে বলে আমাকে জানিয়েছিলেন।