ফরিদপুরে নামাজের সময় মাথা থেকে টুপি ফেলানোকে কেন্দ্র করে হামলায় দুই নারী আহত
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় তারাবি নামাজে এক কিশোরের মাথা থেকে অপর কিশোর টুপি ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই নারী আহতের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. হারুন অর রশিদ। এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের জয়দেবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই স্থানীয় থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
থানা ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় আলফাডাঙ্গা উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামের সরোয়ার মোল্যার ছেলে জাকারিয়া (১৪) ও পাশের বারাংকুলা চরপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম মোল্যার চেলে হৃদয় (১২) মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে যায়। এসময় জাকারিয়ার মাথা থেকে টুপি ফেলে দেয় হৃদয়। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে নামাজ শেষে কিশোর হৃদয়ের পরিবারের সদস্যরা জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয় লোকজন উভয় পরিবারকে মীমাংসা করে দেন। এর জের ধরে বুধবার (১২ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বারাংকুলা চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা কিশোর হৃদয়ের সম্পর্কে চাচা কবির মোল্যা ও ইয়াছিন মোল্যার নেতৃত্বে একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয়দেবপুর মধ্যপাড়া এলাকার অপর কিশোর জাকারিয়ার চাচা জাফর মোল্যা ও সাইফুল মোল্যাসহ চারটি বসতবাড়িতে হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে জাফর মোল্যার স্ত্রী পারভীন বেগম (৪৫) ও কামাল মোল্যার স্ত্রী তানিয়া বেগমকে (২৭) মারধর করে হামলাকারীরা। আহত দুই নারীকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে তানিয়া বেগমের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ভুক্তভোগী আহত নারী পারভীন বেগম বলেন, ‘পোলাপানে টুপি নিয়ে মসজিদে মারামারি করেছে। এই ঘটনা নিয়ে কবীর মোল্যা ও ইয়াছিন মোল্যার নেতৃত্বে লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তাদের বাঁধা দিতে গেলে আমাকে ও আমার জা’কে (দেবরের স্ত্রী) মারধর করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
তবে অভিযুক্ত ইয়াছিন মোল্যার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বুধবার ভোরে সাইফুল মোল্যার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক আমার বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এসময় আমাদের পক্ষেরও তিনজন নারী আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর রশীদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’