ঢাকা ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরে যুবদল নেতা রঞ্জিত ও লিটন হামলাকারীদে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ফরিদপুরে জুট ফাইবারস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ড র‍্যাবের অভিযানে বাসচালক সুমন গাজী গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই জ‌মে উঠে‌ছে রাজবাড়ীর লোকজ মেলা নগরকান্দায় এসএসসির ২৩ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার  নববর্ষের প্রতিজ্ঞা হোক গণতন্ত্র স্বাধীনতা নতুন বাংলাদেশ দূর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ রাজনীতি : শ্যামা ওবায়েদ রিঙ্কু অনিয়ম ও অবহেলায় নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে চিকিৎসা সেবা সদরপুরে ন্যাশনাল প্রাইভেট হাসপাতালের উদ্বোধন কমলগঞ্জে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন  পহেলা বৈশাখে পাংশা উপজেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন

ফরিদপুরে জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি পরিচয়ে আ.লীগকে পুর্নবাসনের অভিযোগ

শ্রাবণ হাসান:

 

ফরিদপুরে জেলা শ্রমিকদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মোজাফফর আলী মুসার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে সংগঠনটির সভাপতি পরিচয়ে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনবার্সনের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
আজ শনিবার দুপুর ২ টার দিকে শহরের হাবেলী গোপালপুরে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের দলীয় কার্যালয়ে জেলা, মহানগর ও কোতয়ালী থানা কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক মো. সামসুল হক সরদার। এ সময় সংগঠনটির বিভিন্ন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২০১০ সালে তিন বছর মেয়াদে জেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে মোজাফফর আলী মুসাকে সভাপতি এবং ওলিয়ার রহমানকে সাধারন সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে তাঁরা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন। ২০১১ সালে মোজাফফর আলী মুসার ভাই শেখ মাহতাব আলী মেথু তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি ও মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সাথে যোগ দিয়ে পৌর মেয়র হন। এসময় থেকেই মোজাফফর আলী মুসা তার ভাইয়ের সাথে মিলে খন্দকার মোশাররফের ছক অনুযায়ী শ্রমিক দলকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করেন। এতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম। এরমাঝে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে তাঁরা সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এক জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
এরপর থেকে মোজাফফর আলী মুসা খন্দকার মোশাররফের আশীর্বাদে আবাসিক হোটেলে অনৈতিক ব্যবসায় সহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরেন। তাঁর জামাতা মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামী আসিবুর রহমান ফারহানের নেতৃত্বে হাতুরী বাহিনী গঠন করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন।
তিনি বলেন, তাঁদের এই দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করা হলে প্রথমে চার সদস্যের একটি কমিটি ও পরে দুই সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শ্রমিকদল নেতা সামসুল হক সরদার অভিযোগ করে বলেন, ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে শ্রমিকদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। কোন সভা কিংবা সম্মেলন আয়োজন ছাড়াই টাকার বিনিময়ে পুরনো তারিখ দেখিয়ে জেলার সদরপুর, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া নতুন করে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর কমিটির অনুমোদনও দেন। যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের আস্থাভাজন আওয়ামী লীগের লোকদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোজাফফর আলী মুসার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিনে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এসব বিষয়ে কথা হয় শ্রমিক দলের ফরিদপুর অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও লেবার বোর্ডের সভাপতি খাজা খায়েরের সাথে। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব। তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর জেলা কমিটি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত। এখন যারা অভিযোগ করছেন দুঃসময়ে তাঁরাতো কেউ অভিযোগ করেননি, দলের পাশেও পাওয়া যায়নি। একজন আওয়ামী লীগ করতেই পারে, সেটাতো দোষের কিছু না। আমিও এক সময় আওয়ামী লীগের ছিলাম, আমার বাবা ও ভাইও আওয়ামী লীগ করতেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৫:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
৬৩ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরে জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি পরিচয়ে আ.লীগকে পুর্নবাসনের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৫:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

 

ফরিদপুরে জেলা শ্রমিকদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মোজাফফর আলী মুসার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে সংগঠনটির সভাপতি পরিচয়ে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনবার্সনের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
আজ শনিবার দুপুর ২ টার দিকে শহরের হাবেলী গোপালপুরে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের দলীয় কার্যালয়ে জেলা, মহানগর ও কোতয়ালী থানা কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক মো. সামসুল হক সরদার। এ সময় সংগঠনটির বিভিন্ন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২০১০ সালে তিন বছর মেয়াদে জেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে মোজাফফর আলী মুসাকে সভাপতি এবং ওলিয়ার রহমানকে সাধারন সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে তাঁরা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন। ২০১১ সালে মোজাফফর আলী মুসার ভাই শেখ মাহতাব আলী মেথু তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি ও মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সাথে যোগ দিয়ে পৌর মেয়র হন। এসময় থেকেই মোজাফফর আলী মুসা তার ভাইয়ের সাথে মিলে খন্দকার মোশাররফের ছক অনুযায়ী শ্রমিক দলকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করেন। এতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম। এরমাঝে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে তাঁরা সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এক জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
এরপর থেকে মোজাফফর আলী মুসা খন্দকার মোশাররফের আশীর্বাদে আবাসিক হোটেলে অনৈতিক ব্যবসায় সহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরেন। তাঁর জামাতা মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামী আসিবুর রহমান ফারহানের নেতৃত্বে হাতুরী বাহিনী গঠন করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন।
তিনি বলেন, তাঁদের এই দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করা হলে প্রথমে চার সদস্যের একটি কমিটি ও পরে দুই সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শ্রমিকদল নেতা সামসুল হক সরদার অভিযোগ করে বলেন, ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে শ্রমিকদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। কোন সভা কিংবা সম্মেলন আয়োজন ছাড়াই টাকার বিনিময়ে পুরনো তারিখ দেখিয়ে জেলার সদরপুর, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া নতুন করে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর কমিটির অনুমোদনও দেন। যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের আস্থাভাজন আওয়ামী লীগের লোকদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোজাফফর আলী মুসার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিনে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এসব বিষয়ে কথা হয় শ্রমিক দলের ফরিদপুর অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও লেবার বোর্ডের সভাপতি খাজা খায়েরের সাথে। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব। তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর জেলা কমিটি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত। এখন যারা অভিযোগ করছেন দুঃসময়ে তাঁরাতো কেউ অভিযোগ করেননি, দলের পাশেও পাওয়া যায়নি। একজন আওয়ামী লীগ করতেই পারে, সেটাতো দোষের কিছু না। আমিও এক সময় আওয়ামী লীগের ছিলাম, আমার বাবা ও ভাইও আওয়ামী লীগ করতেন।