ফরিদপুরে দুর্বৃত্তদের দিয়ে বসতঘর ভাঙচুর, ভিডিও করায় সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত
ফরিদপুরে জমিজমা বিরোধের জের ধরে একটি বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হামলার দৃশ্য ধারণ করায় প্রতিবেশী বাসিন্দা আনিচুর রহমান নামে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। আহত সাংবাদিক দেশটিভি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট খোদাবক্স সড়কের খৈমদ্দিন মিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, পাশ্ববর্তী মোল্যাবাড়ি সড়ক এলাকার বাসিন্দা বিএনপি সমর্থক ঈমান মোল্যা ও শ্রমিক নেতা মারুফ মোল্যার নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ওই এলাকার একেএম মাসুদুল আলমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ইটের দেয়াল ভাঙচুর করে। সেই ঘটনার ভিডিও করায় সাংবাদিক আনিচুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে।
আহত সাংবাদিক আনিচুর রহমান বলেন, ভাঙচুরের সময় আমি ভিডিও করি এবং পৌরসভা বা আদালতের অনুমোদন আছে কি-না জানতে চাই। তখনই তাঁরা আমাকে অতর্কিতভাবে কিলঘুষি ও লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। আমার দুটি মোবাইল ও বাড়ির সিসি ক্যামেরাও ভেঙে ফেলে। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে পাশে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা ঐ বাড়ি ঘিরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশকে জানালে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী মাসুদ আলম জানান, তাঁদের বসতঘরের পেছনে বোয়ালমারী উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মজিবুল হকের ছেলে মইনুল হক মঞ্জুর পাঁচ শতাংশ জমি রয়েছে। মইনুল সম্পর্কে তাঁর আপন বোনের ছেলে এবং বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। সেই জমির রাস্তাও রয়েছে এবং তাঁর জমির মধ্যে কোনো জমিও পাবে না বলে জানান।
মাসুদ আলম বলেন- আমার ক্রয়কৃত জমিতে বিগত ৫০ বছর যাবৎ বসত করে আসছি। হঠাৎ করে গত ৫ আগস্টের পর থেকে শহরের মোল্যা বাড়ি এলাকার ঈমান মোল্যা, মারুফ মোল্যার যোগাসাজসে আমাকে ওই বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে। আজ হঠাৎ করে ৫০/৬০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এসে আমার বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় আমি ভয়ে পালিয়ে থাকি। ঘটনার ভিডিও করায় আমার প্রতিবেশী সাংবাদিক আনিচকে বেধমভাবে মারধর করে আটকে রাখে।
তবে এ বিষয়ে জানতে মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে কথা হয় ঈমান মোল্যার সাথে। তিনি বলেন- মাসুদ মোল্যার জমির ভেতর মইনুলদের জমি রয়েছে। কয়েকবার শালিসের মাধ্যমে ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে কিন্তু ভাঙেনি। তাই আজ আমরা নিজেরাই ভাঙতে গেছিলাম তখন ওই সাংবাদিক এসে ভিডিও করতে থাকে এবং কেন ভাঙতেছে জানতে চেয়েছিল।
পৌরসভা বা আদালতের নির্দেশনা রয়েছে কি-না বা আপনারা কেন গিয়ে ভাঙলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন- “আইন আমাদের পকেটে থাকে, আগে সমাজ পরে আইন। সব শোনার আপনি কে? এই বলে কথাপোকথন কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।











