ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরে কৃষককে অপহরণের ৭ দিনেও মিলেনি সন্ধান, মুক্তিপণ দাবি দালালের খপ্পরে সৌদি গিয়ে নিখোঁজ দুই ভাই ফরিদপুরে শ্যামা ওবায়েদের গাড়ীবহরে হামলার মামলায় আওয়ামীলীগের ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে সালথা বিএনপির নেতা নাসির গ্রেপ্তার বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সদরপুর শাখার সভাপতি শিমুল – সম্পাদক রাজিব ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদের দাফন সম্পন্ন। ফরিদপুর জজকোর্ট পৌর মার্কেটে অবৈধ্য দোকান নির্মানের অভিযোগ কোটালীপাড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ীতে দুধর্ষ চুরি রাজবাড়ীতে পদ্মানদীতে ধরা পড়লো ২৮ কেজি ওজনের কাতল মাছটি  বিক্রি হল ৫০ হাজার টাকা প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করার আশ্বাস মহাপরিচালকের

রাজবাড়ীতে দালালের খপ্পরে সর্বস্বান্ত তিন পরিবার 

মেহেদী হাসান পাংশা প্রতিনিধি:

 

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের এক দালালের খপ্পরে পড়ে তিন যুবক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তাদের মধ্যে দুই জন সৌদি আরবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অভিযুক্ত আদম ব্যবসায়ী মো: সিরাজুল ইসলাম (সিরু) উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের ছোট কলকলিয়া গ্রামের মো: আবজাল খার ছেলে। ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের ছোট কলকলিয়া গ্রামের মৃত মো: মফিজুর রহমানের (বাবু) ছেলে মো: আরিফ মন্ডল, একই এলাকার মো: সিরাজ মোল্লার ছেলে মো: আব্দুল সালাম। তারা দুইজনই সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) না থাকায় লুকিয়ে বসবাস করছে। এছাড়াও একই এলাকার তারেক শেখ নামে আরও এক যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর পাঠায়। সেখানে দুই মাস জেলে থেকে দেশে এসে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ভুক্তভোগী মো: আরিফ মন্ডলের স্ত্রী মোছা: নার্গিস এডভোকেট এর মাধ্যমে দালালদের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ্য করা হয় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মো: সিরাজুল ইসলাম সিরু (আদম ব্যবসায়ী) সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) সহ সকল খরচের জন্য ৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নেন।চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী সৌদি আরবে মো: আরিফ মন্ডল গেলেও এখন প্রযন্ত কাজ না পাওয়ায় অর্থহীনতায় অধ্য অনাহারে জীবন যাপন করছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে মো: আরিফ মন্ডল কে সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) পাইয়ে না দেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয় লিগ্যাল নোটিশে।

ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোছা: নার্গিসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামীর ছোট একটি দোকান ছিলো। সেই দোকান বিক্রি ও বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন করে মো: সিরাজুল ইসলাম সিরু (আদম ব্যবসায়ী) কে টাকা দিছি।আমার স্বামী প্রায় ৩ মাস যাবত সৌদি আরবে গিয়ে বসে আছে। কোন কাজ নাই আমাকে মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে হয়েছে। আমার তিন ছেলে মেয়ে। সাথে আমার শাশুড়ী আছে।বাড়িতে কোন ঢাকা নাই।বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় তাকে পরিক্ষা দিয়ে যাওয়ার গাড়ি ভাড়াও দিতে পারছি না।মানুষের কাছ থেকে চাউল ধার করে এনে ছেলে মেয়েদের খাওয়াচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী দোকানের পাশাপাশি মাঠে কাজ করতো। সে মাঝে মাঝে সিরুর (আদম) বাড়িতেও কাজ করতো।সিরু আমার স্বামীকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশ পাঠিয়েছে। এখন আমি সর্বস্বান্ত।

ভুক্তভোগী মো: আব্দুল সালামের মা বলেন, আমার ছেলেকেও সিরু সৌদি আরবে পাঠিয়েছে। আমার ধার দেনা করে সিরুকে টাকা দিয়েছে। সৌদি আরবে গিয়ে আমার ছেলে কাজ পাচ্ছে না।দেনাদার বাড়িতে বারংবার আসছে।ঘরে খাবার নাই।ছেলের বউ কে তার ভাইয়েরা বাবার বাড়ি নিয়ে গেছে। আমি মানুষের বাড়ি থেকে চায়েচিন্তে খাচ্ছি।

ভুক্তভোগী তারেক শেখ এর মা বলেন, সিরু আমার ছেলে কে বিদেশ পাঠানোর জন্য ৫ লাখ টাকা নিছে।আমার ছেলে বিদেশ পৌছালেই সেই দেশের পুলিশের ধরে। দুই মাস জেল খেটে দেশে আসছে।বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে সিরু কে টাকা দেওয়া হয়েছিলো। দেনাদার বাড়ি আসছে প্রতিনিয়ত। ছেলে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযুক্ত মো: সিরাজুল ইসলাম (সিরু) বলেন, আমি আরিফ ও সালামের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি।তারা পুরো টাকাই দিয়ে দিছে। আমি আসলে কোন অফিস চিনি না।আমার এক পরিচিত ব্যক্তির কাছে টাকা দিয়েছি,সেই বিদেশ লোক পাঠায়।আমি কি করবো এখন!তারা আমার নামে মামলা করছে। মামলায় যা হয় তাই মেনে নেবো।

 

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৮:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
৮৬ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ীতে দালালের খপ্পরে সর্বস্বান্ত তিন পরিবার 

আপডেট সময় ০৮:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

 

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের এক দালালের খপ্পরে পড়ে তিন যুবক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তাদের মধ্যে দুই জন সৌদি আরবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অভিযুক্ত আদম ব্যবসায়ী মো: সিরাজুল ইসলাম (সিরু) উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের ছোট কলকলিয়া গ্রামের মো: আবজাল খার ছেলে। ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের ছোট কলকলিয়া গ্রামের মৃত মো: মফিজুর রহমানের (বাবু) ছেলে মো: আরিফ মন্ডল, একই এলাকার মো: সিরাজ মোল্লার ছেলে মো: আব্দুল সালাম। তারা দুইজনই সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) না থাকায় লুকিয়ে বসবাস করছে। এছাড়াও একই এলাকার তারেক শেখ নামে আরও এক যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর পাঠায়। সেখানে দুই মাস জেলে থেকে দেশে এসে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ভুক্তভোগী মো: আরিফ মন্ডলের স্ত্রী মোছা: নার্গিস এডভোকেট এর মাধ্যমে দালালদের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ্য করা হয় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মো: সিরাজুল ইসলাম সিরু (আদম ব্যবসায়ী) সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) সহ সকল খরচের জন্য ৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নেন।চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী সৌদি আরবে মো: আরিফ মন্ডল গেলেও এখন প্রযন্ত কাজ না পাওয়ায় অর্থহীনতায় অধ্য অনাহারে জীবন যাপন করছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে মো: আরিফ মন্ডল কে সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) পাইয়ে না দেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয় লিগ্যাল নোটিশে।

ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোছা: নার্গিসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামীর ছোট একটি দোকান ছিলো। সেই দোকান বিক্রি ও বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন করে মো: সিরাজুল ইসলাম সিরু (আদম ব্যবসায়ী) কে টাকা দিছি।আমার স্বামী প্রায় ৩ মাস যাবত সৌদি আরবে গিয়ে বসে আছে। কোন কাজ নাই আমাকে মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে হয়েছে। আমার তিন ছেলে মেয়ে। সাথে আমার শাশুড়ী আছে।বাড়িতে কোন ঢাকা নাই।বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় তাকে পরিক্ষা দিয়ে যাওয়ার গাড়ি ভাড়াও দিতে পারছি না।মানুষের কাছ থেকে চাউল ধার করে এনে ছেলে মেয়েদের খাওয়াচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী দোকানের পাশাপাশি মাঠে কাজ করতো। সে মাঝে মাঝে সিরুর (আদম) বাড়িতেও কাজ করতো।সিরু আমার স্বামীকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশ পাঠিয়েছে। এখন আমি সর্বস্বান্ত।

ভুক্তভোগী মো: আব্দুল সালামের মা বলেন, আমার ছেলেকেও সিরু সৌদি আরবে পাঠিয়েছে। আমার ধার দেনা করে সিরুকে টাকা দিয়েছে। সৌদি আরবে গিয়ে আমার ছেলে কাজ পাচ্ছে না।দেনাদার বাড়িতে বারংবার আসছে।ঘরে খাবার নাই।ছেলের বউ কে তার ভাইয়েরা বাবার বাড়ি নিয়ে গেছে। আমি মানুষের বাড়ি থেকে চায়েচিন্তে খাচ্ছি।

ভুক্তভোগী তারেক শেখ এর মা বলেন, সিরু আমার ছেলে কে বিদেশ পাঠানোর জন্য ৫ লাখ টাকা নিছে।আমার ছেলে বিদেশ পৌছালেই সেই দেশের পুলিশের ধরে। দুই মাস জেল খেটে দেশে আসছে।বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে সিরু কে টাকা দেওয়া হয়েছিলো। দেনাদার বাড়ি আসছে প্রতিনিয়ত। ছেলে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযুক্ত মো: সিরাজুল ইসলাম (সিরু) বলেন, আমি আরিফ ও সালামের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি।তারা পুরো টাকাই দিয়ে দিছে। আমি আসলে কোন অফিস চিনি না।আমার এক পরিচিত ব্যক্তির কাছে টাকা দিয়েছি,সেই বিদেশ লোক পাঠায়।আমি কি করবো এখন!তারা আমার নামে মামলা করছে। মামলায় যা হয় তাই মেনে নেবো।