ঢাকা ০১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে ইটভাটায় ৮ লাখ টাকা দাবি, না পেয়ে প্রবেশপথ আটকিয়ে দেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

ফরিদপুরে একটি ইটভাটার প্রবেশপথ আটকিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উঠেছে স্থানীয় এক কৃষকদল নেতার বিরুদ্ধে। এতে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ভাটার কার্যক্রম। পরে ৮ ঘন্টা পর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অবমুক্ত করা হয়।

ভাটার মালিকের অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের পর থেকে জোড়পূর্বকভাবে টাকা দাবি করে আসছেন স্থানীয় ফরিদ শেখ নামে এক ব্যক্তি। সেই টাকা না দেয়ায় প্রবেশপথে আড় করে ট্রাক ও ট্রলি গাড়ি রেখে আটকিয়ে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি, ব্যবসায়ীক লেনদেনের প্রায় ৮ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে।

গতকাল শনিবার জেলা সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর পরশমণি ব্রিকসে (পিএমবি) এ ঘটনা ঘটে। বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়- ইটভাটার প্রবেশপথে একটি ট্রলি গাড়ি আড় করে রাখা হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে একটি ট্রাক দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়। পরে দুপুরের দিকে ট্রাকটি সরিয়ে ট্রলি আড় করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ফরিদ শেখ তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভের মাধ্যমে তুলে ধরেন এবং কিছু সময় পরে তা ডিলিট করে দেন। বিকালে সেনাবাহিনীকে অবগত করলে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে গাড়িটি সরিয়ে নেয়া হয়।

জানা যায়, ফরিদ শেখ ফরিদপুর পৌরসভার বৈঠাখালী এলাকার বাসিন্দা। তিনি মহানগর কৃষকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। ওই ইটভাটার মালিক শিবরামপুরের বাসিন্দা চঞ্চল কুমার ঘোষ। তাঁদের মধ্যে ভাটায় মাটি সরবরাহ নিয়ে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীক লেনদেন রয়েছে।

চঞ্চল কুমার ঘোষ জানান- ফরিদ শেখ আমার ভাটায় মাটি সরবরাহ করে আসত। এই বাবদ অগ্রিম ১৩ লক্ষ টাকাসহ ১৪ লাখ টাকার ইট নিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত টাকার মাটি দেয়ার কথা থাকলেও মাটি দেয়নি। তাঁর কাছে এখনও ৪ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন- গত ৫ আগস্টের পর থেকে হঠাৎ করে আমার কাছে ১১ লক্ষ টাকা  দাবি করে বসে। কিন্তু সে আমার কাছে কোনো টাকাই পাবে না। আমার পাওনা টাকা না দিতে নতুন করে ফন্দি পেতেছে, আমার কাছে চাঁদা নেয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় তাঁর লোকজন নিয়ে ভাটায় এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে যায়। আজ সকাল থেকে ভাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া জুলাই আন্দোলনের একাধিক মিথ্যা হত্যা মামলায় আমাকে আসামী হিসেবে নাম দিয়েছে এই ফরিদ শেখ। আমাদের আওয়ামীলীগের দোসর বলে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমি এখন নিরুপায় হয়ে পড়েছি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভিন্ন অভিযোগ করেন ফরিদ শেখ। তিনি বলেন, চঞ্চল ঘোষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষের ভাতিজা। সেই প্রভাবে ২০২১ সালের দিকে আমার ব্যবসায়িক ৮ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা আটকিয়ে রাখে। সেই টাকা চাইতে গেলে হত্যার হুমকি-ধমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হতো।

তিনি আরও বলেন, গত ৫ তারিখের পর স্থানীয়ভাবে শালিস হলে সেখানে উভয়পক্ষের হিসাব মতে টাকা আমি পেতে যাই কিন্তু সেই টাকাও দিচ্ছে না। পরে আমি থানা ও সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু ন্যায়বিচার না পেয়ে আজ আমি ভাড়া করা ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে ভাটা আটকিয়ে দিই। আমি একজন ছোট ব্যবসায়ী, আমার টাকাগুলো যেন ফেরত দেয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর সেনাক্যাম্প জানান, খবর পাওয়ার সাথেই ট্রলি গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলা হয়। পরে ওই ব্যক্তি নিজেই সরিয়ে নেন। এছাড়া ফরিদ শেখকে ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৮:৫১:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
৭১ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরে ইটভাটায় ৮ লাখ টাকা দাবি, না পেয়ে প্রবেশপথ আটকিয়ে দেয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৮:৫১:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

 

ফরিদপুরে একটি ইটভাটার প্রবেশপথ আটকিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উঠেছে স্থানীয় এক কৃষকদল নেতার বিরুদ্ধে। এতে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ভাটার কার্যক্রম। পরে ৮ ঘন্টা পর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অবমুক্ত করা হয়।

ভাটার মালিকের অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের পর থেকে জোড়পূর্বকভাবে টাকা দাবি করে আসছেন স্থানীয় ফরিদ শেখ নামে এক ব্যক্তি। সেই টাকা না দেয়ায় প্রবেশপথে আড় করে ট্রাক ও ট্রলি গাড়ি রেখে আটকিয়ে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি, ব্যবসায়ীক লেনদেনের প্রায় ৮ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে।

গতকাল শনিবার জেলা সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর পরশমণি ব্রিকসে (পিএমবি) এ ঘটনা ঘটে। বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়- ইটভাটার প্রবেশপথে একটি ট্রলি গাড়ি আড় করে রাখা হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে একটি ট্রাক দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়। পরে দুপুরের দিকে ট্রাকটি সরিয়ে ট্রলি আড় করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ফরিদ শেখ তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভের মাধ্যমে তুলে ধরেন এবং কিছু সময় পরে তা ডিলিট করে দেন। বিকালে সেনাবাহিনীকে অবগত করলে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে গাড়িটি সরিয়ে নেয়া হয়।

জানা যায়, ফরিদ শেখ ফরিদপুর পৌরসভার বৈঠাখালী এলাকার বাসিন্দা। তিনি মহানগর কৃষকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। ওই ইটভাটার মালিক শিবরামপুরের বাসিন্দা চঞ্চল কুমার ঘোষ। তাঁদের মধ্যে ভাটায় মাটি সরবরাহ নিয়ে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীক লেনদেন রয়েছে।

চঞ্চল কুমার ঘোষ জানান- ফরিদ শেখ আমার ভাটায় মাটি সরবরাহ করে আসত। এই বাবদ অগ্রিম ১৩ লক্ষ টাকাসহ ১৪ লাখ টাকার ইট নিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত টাকার মাটি দেয়ার কথা থাকলেও মাটি দেয়নি। তাঁর কাছে এখনও ৪ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন- গত ৫ আগস্টের পর থেকে হঠাৎ করে আমার কাছে ১১ লক্ষ টাকা  দাবি করে বসে। কিন্তু সে আমার কাছে কোনো টাকাই পাবে না। আমার পাওনা টাকা না দিতে নতুন করে ফন্দি পেতেছে, আমার কাছে চাঁদা নেয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। প্রায় তাঁর লোকজন নিয়ে ভাটায় এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে যায়। আজ সকাল থেকে ভাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া জুলাই আন্দোলনের একাধিক মিথ্যা হত্যা মামলায় আমাকে আসামী হিসেবে নাম দিয়েছে এই ফরিদ শেখ। আমাদের আওয়ামীলীগের দোসর বলে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমি এখন নিরুপায় হয়ে পড়েছি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভিন্ন অভিযোগ করেন ফরিদ শেখ। তিনি বলেন, চঞ্চল ঘোষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষের ভাতিজা। সেই প্রভাবে ২০২১ সালের দিকে আমার ব্যবসায়িক ৮ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা আটকিয়ে রাখে। সেই টাকা চাইতে গেলে হত্যার হুমকি-ধমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হতো।

তিনি আরও বলেন, গত ৫ তারিখের পর স্থানীয়ভাবে শালিস হলে সেখানে উভয়পক্ষের হিসাব মতে টাকা আমি পেতে যাই কিন্তু সেই টাকাও দিচ্ছে না। পরে আমি থানা ও সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু ন্যায়বিচার না পেয়ে আজ আমি ভাড়া করা ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে ভাটা আটকিয়ে দিই। আমি একজন ছোট ব্যবসায়ী, আমার টাকাগুলো যেন ফেরত দেয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর সেনাক্যাম্প জানান, খবর পাওয়ার সাথেই ট্রলি গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলা হয়। পরে ওই ব্যক্তি নিজেই সরিয়ে নেন। এছাড়া ফরিদ শেখকে ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে।