ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরে যুবদল নেতা রঞ্জিত ও লিটন হামলাকারীদে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ফরিদপুরে জুট ফাইবারস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ড র‍্যাবের অভিযানে বাসচালক সুমন গাজী গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই জ‌মে উঠে‌ছে রাজবাড়ীর লোকজ মেলা নগরকান্দায় এসএসসির ২৩ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার  নববর্ষের প্রতিজ্ঞা হোক গণতন্ত্র স্বাধীনতা নতুন বাংলাদেশ দূর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ রাজনীতি : শ্যামা ওবায়েদ রিঙ্কু অনিয়ম ও অবহেলায় নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে চিকিৎসা সেবা সদরপুরে ন্যাশনাল প্রাইভেট হাসপাতালের উদ্বোধন কমলগঞ্জে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন  পহেলা বৈশাখে পাংশা উপজেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন

অনিয়ম ও অবহেলায় নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে চিকিৎসা সেবা

বিশেষ প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রোগীরা অফিস সময়ে ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিস্তর। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালটিতে মাত্র পাঁচ-ছয়জন চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ চিকিৎসক প্রেষণে রয়েছেন। ফলে চিকিৎসা বিঘ্ন ঘটছে।
অভিযোগ আছে, যে কয়জন ডাক্তার রয়েছে তারাও দিনের বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যক্তিগত চেম্বারে মাঝেমধ্যে রোগী দেখেন; ফলে চিকিৎসক সংকট ও ডাক্তারদের বাইরে রোগী দেখায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। এই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য গাইনী, শিশুরোগ ও ইএনটি বিশেষজ্ঞও নেই বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের অনিয়ম ও হাসপাতাল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইলে স্থানীয় গোলাম হায়দার নামের এক অবসরপ্রাপ্ত মেজরকেও স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতালের স্টাফ দিয়ে নাজেহাল করা হয় বলে ওই মেজরের অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজন মত জনবল না থাকার পরও ডাক্তারদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সঠিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা সাধারণ রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও তেমন কোন ওষুধই দেওয়া হয় না। তবে, হাসপাতালটির চিকিৎসকদের দাবি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সংকট রয়েছে ওষুধেরও।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তারদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ পেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে সিডিউল অনুসারে রোগীদের খাবার দেওয়া হয়না। সরকারি ওষুধও মাঝেমধ্যে চুরি করে বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এছাড়া রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে হাসপাতালটির স্টাফরা।
গত কয়েক দিন আগে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। তখন সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ্যকে এ্যকে আসতে থাকেন ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ ৪/৫ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমান রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একাধিক স্টাফ অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে কর্মরত এক  আয়া নিয়মিত হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি বেতন তুলে নিচ্ছেন! আনুমানিক পাঁচ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে যাচ্ছেন। তবে মাঝে মধ্যে উপস্থিত হলেও উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। সারাদিন আর খোঁজ মিলেনা। এছাড়া ওই আয়া মাসিক দুই হাজার টাকার বিনিময়ে হাসিনা নামের এক মহিলাকে দিয়ে ডিউটি করান। সেও দায়সারা কাজ করেন। তবে, তবে ঐ আয়ার পরিবারের দাবি অভিযোগটি সঠিক নয়। সে  হাসপাতালে নিয়মিত ডিউটি করেন।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে থাকেন না। অফিস চলাকালীন বেশির ভাগ সময় মিটিং করার অজুহাতে বাহিরে থাকেন। দিনের কিছুটা সময় তিনি আরোগ্য সদন দি ল্যাব নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন। ওয়ার্ড বয় ও অন্য স্টাফদের দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গুরুত্বপূর্ণ রোগী আসলে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে ফরিদপুর বা ঢাকায় রিফাড করা হয়।
আর এসবই নাকি হচ্ছে ডা. জয়দেব সরকারের ছত্রছায়ায়। এসময় ভূক্তভোগি রোগী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন তারা।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা নগরকান্দা পৌরসভার সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার সন্তান শিশুকে নিয়ে দু’দিন যাবৎ বসে আছি। কোন ওষুধ পাচ্ছি না। হাসপাতালে খাবার-দাবারের মানও ভালো না। চিকিৎসকরা ঠিকমতো আসেন না রোগীর কাছে। নার্স ও আয়া’রাও ভালো ব্যবহার করেননা।
নগরকান্দার জুঙ্গুরদী এলাকার বাসিন্দা মানসুরা বেগম নামের একজন মা বলেন, আমার শিশুকে নিয়ে এসেছি প্রায় দু’দিন হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ওষুধ কোনটিই পাচ্ছিনা। তার অভিযোগ ডাক্তাররা নিয়মিত না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব সরকারের কাছ বিষয়টি জানতে চাইলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এছাড়া
সেই আয়ার বিষয়ে জানতে চাইলেও কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে সরাসরি এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা করে বাকী কথা বলতে চান তখন।
এব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, হাসপাতালের অনিয়মের অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। যদি বিষয়টি সত্য হয় কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ইউএনও বলেন, এছাড়া হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়েও যাঁচাই-বাছাই করে দেখা হবে। তবে, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট রয়েছে। এছাড়া অফিস টাইমে বাইরে চিকিৎসকরা রোগী দেখার বিষয়টি আমার জানা মতে সঠিক নয়। কারণ, ডাক্তারই হাতে গোনা কয়েকজন, তারা আবার চেম্বার করেন কখন! এছাড়া বাইরে ওষুধ বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৫:০০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
১২১ বার পড়া হয়েছে

অনিয়ম ও অবহেলায় নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে চিকিৎসা সেবা

আপডেট সময় ০৫:০০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রোগীরা অফিস সময়ে ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিস্তর। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালটিতে মাত্র পাঁচ-ছয়জন চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ চিকিৎসক প্রেষণে রয়েছেন। ফলে চিকিৎসা বিঘ্ন ঘটছে।
অভিযোগ আছে, যে কয়জন ডাক্তার রয়েছে তারাও দিনের বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যক্তিগত চেম্বারে মাঝেমধ্যে রোগী দেখেন; ফলে চিকিৎসক সংকট ও ডাক্তারদের বাইরে রোগী দেখায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। এই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য গাইনী, শিশুরোগ ও ইএনটি বিশেষজ্ঞও নেই বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের অনিয়ম ও হাসপাতাল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইলে স্থানীয় গোলাম হায়দার নামের এক অবসরপ্রাপ্ত মেজরকেও স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতালের স্টাফ দিয়ে নাজেহাল করা হয় বলে ওই মেজরের অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজন মত জনবল না থাকার পরও ডাক্তারদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সঠিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা সাধারণ রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও তেমন কোন ওষুধই দেওয়া হয় না। তবে, হাসপাতালটির চিকিৎসকদের দাবি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সংকট রয়েছে ওষুধেরও।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তারদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ পেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে সিডিউল অনুসারে রোগীদের খাবার দেওয়া হয়না। সরকারি ওষুধও মাঝেমধ্যে চুরি করে বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এছাড়া রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে হাসপাতালটির স্টাফরা।
গত কয়েক দিন আগে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। তখন সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ্যকে এ্যকে আসতে থাকেন ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ ৪/৫ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমান রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একাধিক স্টাফ অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে কর্মরত এক  আয়া নিয়মিত হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি বেতন তুলে নিচ্ছেন! আনুমানিক পাঁচ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে যাচ্ছেন। তবে মাঝে মধ্যে উপস্থিত হলেও উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। সারাদিন আর খোঁজ মিলেনা। এছাড়া ওই আয়া মাসিক দুই হাজার টাকার বিনিময়ে হাসিনা নামের এক মহিলাকে দিয়ে ডিউটি করান। সেও দায়সারা কাজ করেন। তবে, তবে ঐ আয়ার পরিবারের দাবি অভিযোগটি সঠিক নয়। সে  হাসপাতালে নিয়মিত ডিউটি করেন।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে থাকেন না। অফিস চলাকালীন বেশির ভাগ সময় মিটিং করার অজুহাতে বাহিরে থাকেন। দিনের কিছুটা সময় তিনি আরোগ্য সদন দি ল্যাব নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন। ওয়ার্ড বয় ও অন্য স্টাফদের দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গুরুত্বপূর্ণ রোগী আসলে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে ফরিদপুর বা ঢাকায় রিফাড করা হয়।
আর এসবই নাকি হচ্ছে ডা. জয়দেব সরকারের ছত্রছায়ায়। এসময় ভূক্তভোগি রোগী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন তারা।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা নগরকান্দা পৌরসভার সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার সন্তান শিশুকে নিয়ে দু’দিন যাবৎ বসে আছি। কোন ওষুধ পাচ্ছি না। হাসপাতালে খাবার-দাবারের মানও ভালো না। চিকিৎসকরা ঠিকমতো আসেন না রোগীর কাছে। নার্স ও আয়া’রাও ভালো ব্যবহার করেননা।
নগরকান্দার জুঙ্গুরদী এলাকার বাসিন্দা মানসুরা বেগম নামের একজন মা বলেন, আমার শিশুকে নিয়ে এসেছি প্রায় দু’দিন হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ওষুধ কোনটিই পাচ্ছিনা। তার অভিযোগ ডাক্তাররা নিয়মিত না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব সরকারের কাছ বিষয়টি জানতে চাইলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এছাড়া
সেই আয়ার বিষয়ে জানতে চাইলেও কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে সরাসরি এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা করে বাকী কথা বলতে চান তখন।
এব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, হাসপাতালের অনিয়মের অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। যদি বিষয়টি সত্য হয় কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ইউএনও বলেন, এছাড়া হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়েও যাঁচাই-বাছাই করে দেখা হবে। তবে, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট রয়েছে। এছাড়া অফিস টাইমে বাইরে চিকিৎসকরা রোগী দেখার বিষয়টি আমার জানা মতে সঠিক নয়। কারণ, ডাক্তারই হাতে গোনা কয়েকজন, তারা আবার চেম্বার করেন কখন! এছাড়া বাইরে ওষুধ বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।