ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে পুলিশ সদস্যদের মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ সালথায় চলাচলের পথে ঘর নির্মানে প্রতিবেশির পথ বন্ধের অভিযোগ সদরপুরে ধর্ষণ ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার -২ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান অতপর: ৩২ জন ডাক্তারের ১০ জনই অনুপস্থিত সালথায় ৭০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী রমজান গ্রেপ্তার ফরিদপুরে একাধিক চিরকুট লিখে মেয়ের শ্বশুরকে দায়ী করে ঠিকাদারের আত্মহত্যা ফরিদপুরে বাড়িঘরে অগ্নিকান্ড ও লুটপাট, পালিয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিত নারী ফরিদপুরে নিষিদ্ধ হওয়া আ.লীগের ২১ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ ফরিদপুরে বিক্রি হওয়া শিশু তানহাকে দেয়া হলো মায়ের জিম্মায়, আগামী ২ জুন শুনানি

সালথায় ৮বছর ধরে ব্রীজের দুইপাশের সংযোগ সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

মনির মোল্লা সালথা:
ফরিদপুরের সালথায় মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত একটি ব্রিজের দু’পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাতায়াতে অনুপযোগি অবস্থা পড়ে আছে। ৮বছর ধরে ভোগান্তিতে ৭ গ্রামের মানুষ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী স্কুলের শিক্ষাক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ও এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গট্টি ও আটঘর এই দুই ইউনিয়নের  সীমান্তের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে মাটিয়াদহ নদীর শাখা মালঞ্চ বিল। বিলের উত্তর পাড়ে রয়েছে খোয়াড়, গোয়ালপাড়া, সেনহাটি ও ভাবুকদিয়া গ্রাম। আর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে সিংহপ্রতাপ, নারানদিয়া ও মেম্বার গট্টি গ্রাম। এই ৭টি গ্রামে বসবাসরত বাসিন্দারা বেশিরভাগ কৃষক। গত ২০১১ সালে এই মালঞ্চ বিলের ওপর প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রীজটি । ব্রীজ নির্মানের তিন-চার বছর পরেই দুইপাশের পাকা সংযোগ সড়ক বন্যায় পানির চাপে ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে আট বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ব্রীজটি। যে কারণে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলছে না কোনো ধরণের যানবাহন। ফলে ব্রিজটি স্থানীয় ৭টি গ্রামের মানুষের জন্য দশ পয়সারও কোনো উপকারে আসছে না। বরং ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
স্থানীয় সমাজ সেবক শাহাজাহান ও কলেজ ছাত্র নাজমুল হোসেন বলেন, দুই ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ১৪ বছর আগে বুড়িদিয়া স্কুলের পেছনে মালঞ্চ বিলের ওপর ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করে সরকার। ব্রিজের দুই পাশে মাটি কেটে নির্মাণ করা হয় কাচা রাস্তা। পরে ওই রাস্তার ওপর ইট বিছিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচলে উপযোগী করে দেয়া হয়। ফলে এসব গ্রামের কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু গত আট বছর আগে বিলের পানির চাপে ব্রিজটির দুইপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে ধসে যায়। এরপর থেকে ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সংশ়িষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ব্রীজের দুইপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কারের দাবী জানাই।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সারাজীবন পাট-ধান ও পেঁয়াজ মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছে এলাকার মানুষ। মালঞ্চ বিলের ওপর ব্রিজ হওয়ার পর কয়েক বছর  মাথায় করে নিয়ে বাজারে ফসল বিক্রি করতে হয়নি। ভ্যান, নসিমন ও গাড়িতে করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করা হয়েছে। কিন্তু গত ৭/৮  বছর ধরে ব্রিজের দুইপাশের সড়ক ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সিংহপ্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেবুল ইসলাম ও কাজী রুবেল বলেন, মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত ব্রীজটি আমাদের স্কুলের পাশেই। এই ব্রীজ দিয়ে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। ব্রীজের দুইপাশের সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সড়ক সংস্কারের দাবী করছি।
সালথা উপজেলা প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার জরুরি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ব্রীজটির দুইপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কার করার জন্য। ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় স্টিমেট পাঠানো হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালি বলেন, অতি দ্রুত সরেজমিনে ব্রীজটি পরিদর্শনে যাবো। তারপর মানুষের চলাচলের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমরা কাজ করবো।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৬:১৫:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
৫৪ বার পড়া হয়েছে

সালথায় ৮বছর ধরে ব্রীজের দুইপাশের সংযোগ সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

আপডেট সময় ০৬:১৫:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
ফরিদপুরের সালথায় মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত একটি ব্রিজের দু’পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাতায়াতে অনুপযোগি অবস্থা পড়ে আছে। ৮বছর ধরে ভোগান্তিতে ৭ গ্রামের মানুষ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী স্কুলের শিক্ষাক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ও এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গট্টি ও আটঘর এই দুই ইউনিয়নের  সীমান্তের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে মাটিয়াদহ নদীর শাখা মালঞ্চ বিল। বিলের উত্তর পাড়ে রয়েছে খোয়াড়, গোয়ালপাড়া, সেনহাটি ও ভাবুকদিয়া গ্রাম। আর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে সিংহপ্রতাপ, নারানদিয়া ও মেম্বার গট্টি গ্রাম। এই ৭টি গ্রামে বসবাসরত বাসিন্দারা বেশিরভাগ কৃষক। গত ২০১১ সালে এই মালঞ্চ বিলের ওপর প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রীজটি । ব্রীজ নির্মানের তিন-চার বছর পরেই দুইপাশের পাকা সংযোগ সড়ক বন্যায় পানির চাপে ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে আট বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ব্রীজটি। যে কারণে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলছে না কোনো ধরণের যানবাহন। ফলে ব্রিজটি স্থানীয় ৭টি গ্রামের মানুষের জন্য দশ পয়সারও কোনো উপকারে আসছে না। বরং ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
স্থানীয় সমাজ সেবক শাহাজাহান ও কলেজ ছাত্র নাজমুল হোসেন বলেন, দুই ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ১৪ বছর আগে বুড়িদিয়া স্কুলের পেছনে মালঞ্চ বিলের ওপর ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করে সরকার। ব্রিজের দুই পাশে মাটি কেটে নির্মাণ করা হয় কাচা রাস্তা। পরে ওই রাস্তার ওপর ইট বিছিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচলে উপযোগী করে দেয়া হয়। ফলে এসব গ্রামের কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু গত আট বছর আগে বিলের পানির চাপে ব্রিজটির দুইপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে ধসে যায়। এরপর থেকে ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সংশ়িষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ব্রীজের দুইপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কারের দাবী জানাই।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সারাজীবন পাট-ধান ও পেঁয়াজ মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছে এলাকার মানুষ। মালঞ্চ বিলের ওপর ব্রিজ হওয়ার পর কয়েক বছর  মাথায় করে নিয়ে বাজারে ফসল বিক্রি করতে হয়নি। ভ্যান, নসিমন ও গাড়িতে করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করা হয়েছে। কিন্তু গত ৭/৮  বছর ধরে ব্রিজের দুইপাশের সড়ক ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সিংহপ্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেবুল ইসলাম ও কাজী রুবেল বলেন, মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত ব্রীজটি আমাদের স্কুলের পাশেই। এই ব্রীজ দিয়ে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। ব্রীজের দুইপাশের সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সড়ক সংস্কারের দাবী করছি।
সালথা উপজেলা প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার জরুরি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ব্রীজটির দুইপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কার করার জন্য। ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় স্টিমেট পাঠানো হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালি বলেন, অতি দ্রুত সরেজমিনে ব্রীজটি পরিদর্শনে যাবো। তারপর মানুষের চলাচলের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমরা কাজ করবো।