ঢাকা ০১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে পুলিশ সদস্যদের মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ সালথায় চলাচলের পথে ঘর নির্মানে প্রতিবেশির পথ বন্ধের অভিযোগ সদরপুরে ধর্ষণ ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার -২ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান অতপর: ৩২ জন ডাক্তারের ১০ জনই অনুপস্থিত সালথায় ৭০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী রমজান গ্রেপ্তার ফরিদপুরে একাধিক চিরকুট লিখে মেয়ের শ্বশুরকে দায়ী করে ঠিকাদারের আত্মহত্যা ফরিদপুরে বাড়িঘরে অগ্নিকান্ড ও লুটপাট, পালিয়ে বেড়াচ্ছে নির্যাতিত নারী ফরিদপুরে নিষিদ্ধ হওয়া আ.লীগের ২১ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ ফরিদপুরে বিক্রি হওয়া শিশু তানহাকে দেয়া হলো মায়ের জিম্মায়, আগামী ২ জুন শুনানি

রাজবাড়ীতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ চরমে

একে আজাদ,রাজবাড়ী:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মরা পদ্মা নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে আজও খেয়া নৌকাই চরবাসীর একমাত্র ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে সামান্য ঝড়ো হাওয়া কিংবা কচুরিপানার জট সবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পারাপারে। আর তাতেই হাজার হাজার মানুষের নিত্যদিনের জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। একটি সেতু নির্মাণ হলে পাল্টে যেতে পারে গোয়ালন্দের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক অবস্থা।
ফরিদপুর জেলার সীমান্তঘেঁষা গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দড়াপের ডাঙ্গী গ্রামটিকে ঘিরেই মূলত এই সমস্যার সূত্রপাত। পদ্মা পাড়ের এই চরাঞ্চল কৃষি উৎপাদনের জন্য আদর্শ হলেও পরিবহণ সংকটে কৃষকরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন। নদী পার হলেই রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু একটি সেতুর অভাবে অসংখ্য শিশু-কিশোরের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে ঘুরে যেতে হয় প্রায় ৭–৮ কিলোমিটার পথ। একটি সেতু নির্মিত হলে শুধু উজানচর নয়, পাশের দৌলতদিয়া ইউনিয়নসহ অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। ফরিদপুর শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে জামতলার হাট, মমিনখার হাটসহ বিভিন্ন এলাকার।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দড়াপের ডাঙ্গী এলাকায় ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনো তা অনুমোদন পায়নি।
স্থানীয় কৃষক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রচুর ফসল উৎপাদন করি। কিন্তু খেয়াঘাট দিয়ে মালামাল পারাপার করতে গিয়ে সময়, শ্রম ও অর্থ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুটি হলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হতো।
জামতলা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ইনসানা ও লামিয়া জানায়, প্রতিদিন খেয়া নৌকা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সময়মতো খেয়া না পেলে অনেক সময় ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলেও যাওয়া যায় না।
খেয়া ঘাটের মাঝি শাকিল শেখ বলেন, এলাকাবাসীর প্রয়োজনে আমাকে দিন-রাত খেয়া চালাতে হয়। সামান্য কচুরিপানায় নৌকা আটকে গেলে তা পরিষ্কার করে আবার চালু করতে হয়। সব জায়গায় সেতু হয়েছে, শুধু আমাদের এখানে হয়নি।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নিল বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সেতুটি অত্যন্ত জরুরি। প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখনো অনুমোদন হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পাশ করানোর চেষ্টা করব।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, চরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোসহ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৬:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
৪৮ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ীতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ চরমে

আপডেট সময় ০৬:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মরা পদ্মা নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে আজও খেয়া নৌকাই চরবাসীর একমাত্র ভরসা। শুষ্ক মৌসুমে সামান্য ঝড়ো হাওয়া কিংবা কচুরিপানার জট সবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পারাপারে। আর তাতেই হাজার হাজার মানুষের নিত্যদিনের জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। একটি সেতু নির্মাণ হলে পাল্টে যেতে পারে গোয়ালন্দের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক অবস্থা।
ফরিদপুর জেলার সীমান্তঘেঁষা গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দড়াপের ডাঙ্গী গ্রামটিকে ঘিরেই মূলত এই সমস্যার সূত্রপাত। পদ্মা পাড়ের এই চরাঞ্চল কৃষি উৎপাদনের জন্য আদর্শ হলেও পরিবহণ সংকটে কৃষকরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন। নদী পার হলেই রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু একটি সেতুর অভাবে অসংখ্য শিশু-কিশোরের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে ঘুরে যেতে হয় প্রায় ৭–৮ কিলোমিটার পথ। একটি সেতু নির্মিত হলে শুধু উজানচর নয়, পাশের দৌলতদিয়া ইউনিয়নসহ অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। ফরিদপুর শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে জামতলার হাট, মমিনখার হাটসহ বিভিন্ন এলাকার।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দড়াপের ডাঙ্গী এলাকায় ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনো তা অনুমোদন পায়নি।
স্থানীয় কৃষক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রচুর ফসল উৎপাদন করি। কিন্তু খেয়াঘাট দিয়ে মালামাল পারাপার করতে গিয়ে সময়, শ্রম ও অর্থ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুটি হলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হতো।
জামতলা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ইনসানা ও লামিয়া জানায়, প্রতিদিন খেয়া নৌকা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সময়মতো খেয়া না পেলে অনেক সময় ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলেও যাওয়া যায় না।
খেয়া ঘাটের মাঝি শাকিল শেখ বলেন, এলাকাবাসীর প্রয়োজনে আমাকে দিন-রাত খেয়া চালাতে হয়। সামান্য কচুরিপানায় নৌকা আটকে গেলে তা পরিষ্কার করে আবার চালু করতে হয়। সব জায়গায় সেতু হয়েছে, শুধু আমাদের এখানে হয়নি।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নিল বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সেতুটি অত্যন্ত জরুরি। প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখনো অনুমোদন হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পাশ করানোর চেষ্টা করব।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, চরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোসহ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।