ঢাকা ০১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ফরিদপুরে হামলার ৯ দিনেও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ব্যবসায়ী, তিন আসামীর জামিন-গ্রেপ্তার নেই কেউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

ফরিদপুরের সদরপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো. খায়রুজ্জামান শহিদ নামে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনার ৯ দিনেও হাসপাতালে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। অপরদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিন আসামী জামিন লাভ করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন আহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
তাঁরা বলছেন, মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এই সুযোগে তিন আসামী আদালত থেকে জামিন লাভ করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

আহত খায়রুজ্জামান শহিদ সদরপুর উপজেলার আকোটরচর ইউনিয়নের সরদারডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, গত ১লা মে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ১০ থেকে ১২ জন লোক তাঁদের বাসার দোতলা ভবনে উঠে ধারালো অস্ত্র ছ্যান দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার (০৭ মে) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার পরেরদিন পর তাঁর স্ত্রী বিউটি আক্তার বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী করা ৭/৮জনকে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত খায়রুজ্জামান শহিদ জানান, গত ১০ বছর যাবৎ প্রতিবেশী ছত্তার শেখ, দুলাল শেখ ও হারেজ শেখ গংদের সাথে বিরোধ ও মামলা রয়েছে। এ মামলায় তার পক্ষে রায় হওয়ার কথা রয়েছে। এই ক্ষোভ থেকে তার বাস ভবনের দোতলায় ১০/১২ জন লোক অতর্কিত প্রবেশ করে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে তারা আমার দোতলায় উঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় সত্তার শেখ নিজেই আমার মাথায় ছ্যানদা দিয়ে কোপ দেয় এবং লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। তখন আমার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে তাকেও মারধর করে।

তাঁর স্ত্রী বিউটি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার পর মামলা করতে গেলে পুলিশ নিজেদের মতো এজাহার সাজিয়ে নেন। মামলা হলেও এখনো একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করেনি। এই সুযোগে তিন আসামী জামিন নিয়েছে শুনেছি। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করছেন না পুলিশ। আমার স্বামী এখনও সুস্থ হয়নি, হাসপাতালে ভর্তি অথচ আসামীরা জামিনও পেয়ে গেছে।

এদিকে অপরপক্ষের সত্তার শেখ বলেন, উনাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি নিয়ে ভেজাল চলতেছে। ওই জমি থেকে মাটি কাটার সময় আমার ছেলেকে পানিতে ফেলে দেয় ভেকু চালক। তখন আমরা উনাদের কাছে বিচার দিতে গেছিলাম। উনারে কে কোপ দিছে আমি জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মামুন হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হলেও তিনজন আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বাকিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ১২:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
৪১০ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরে হামলার ৯ দিনেও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ব্যবসায়ী, তিন আসামীর জামিন-গ্রেপ্তার নেই কেউ

আপডেট সময় ১২:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

 

ফরিদপুরের সদরপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো. খায়রুজ্জামান শহিদ নামে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনার ৯ দিনেও হাসপাতালে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। অপরদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিন আসামী জামিন লাভ করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন আহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
তাঁরা বলছেন, মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এই সুযোগে তিন আসামী আদালত থেকে জামিন লাভ করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

আহত খায়রুজ্জামান শহিদ সদরপুর উপজেলার আকোটরচর ইউনিয়নের সরদারডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, গত ১লা মে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ১০ থেকে ১২ জন লোক তাঁদের বাসার দোতলা ভবনে উঠে ধারালো অস্ত্র ছ্যান দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার (০৭ মে) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার পরেরদিন পর তাঁর স্ত্রী বিউটি আক্তার বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী করা ৭/৮জনকে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত খায়রুজ্জামান শহিদ জানান, গত ১০ বছর যাবৎ প্রতিবেশী ছত্তার শেখ, দুলাল শেখ ও হারেজ শেখ গংদের সাথে বিরোধ ও মামলা রয়েছে। এ মামলায় তার পক্ষে রায় হওয়ার কথা রয়েছে। এই ক্ষোভ থেকে তার বাস ভবনের দোতলায় ১০/১২ জন লোক অতর্কিত প্রবেশ করে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে তারা আমার দোতলায় উঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় সত্তার শেখ নিজেই আমার মাথায় ছ্যানদা দিয়ে কোপ দেয় এবং লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। তখন আমার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে তাকেও মারধর করে।

তাঁর স্ত্রী বিউটি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার পর মামলা করতে গেলে পুলিশ নিজেদের মতো এজাহার সাজিয়ে নেন। মামলা হলেও এখনো একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করেনি। এই সুযোগে তিন আসামী জামিন নিয়েছে শুনেছি। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করছেন না পুলিশ। আমার স্বামী এখনও সুস্থ হয়নি, হাসপাতালে ভর্তি অথচ আসামীরা জামিনও পেয়ে গেছে।

এদিকে অপরপক্ষের সত্তার শেখ বলেন, উনাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি নিয়ে ভেজাল চলতেছে। ওই জমি থেকে মাটি কাটার সময় আমার ছেলেকে পানিতে ফেলে দেয় ভেকু চালক। তখন আমরা উনাদের কাছে বিচার দিতে গেছিলাম। উনারে কে কোপ দিছে আমি জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মামুন হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হলেও তিনজন আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বাকিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।