ফরিদপুরে শ্রমিকদলের সংবাদ সম্মেলন: পূর্বের কমিটিকে অবৈধ ও কার্যকলাপ বেআইনী ঘোষণা
ফরিদপুর জেলা শ্রমিকদলের পূর্বের কমিটি ও সভাপতি মোজাফফর আলী মুসার কার্যকলাপ বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বর্তমান কমিটি। তাঁরা বলছেন- আওয়ামীলীগের আমলে নিস্ক্রিয়তা ও আওয়ামীলীগের যোগদানের কারণে গঠণতন্ত্র অনুযায়ী অনাস্থা জানিয়ে নতুন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে এবং গঠণতন্ত্র মোতাবেক বৈধতা দাবি করছেন।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট ফরিদপুর জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে মোজাফফর আলী মুসাকে সভাপতি ও ওলিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু কমিটি ঘোষণার পর থেকে ২০২৪ এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিস্ক্রিয় ভূমিকায় ছিলো। এরপর চলতি বছরের ৪ এপ্রিল সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক সভাপতিকে অনস্থা জানিয়ে এবং সভাপতিসহ সাধারণ সম্পাদক পদ শূন্য ঘোষণা করে। ওই সভায় নতুন সভাপতি হিসেবে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামসুল হক সরদারকে সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান শেখ মানাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর তাঁরা বিভিন্ন কমিটিও অনুমোদন দেন। এরমধ্যে গত ১৯ ও ২০ আগস্ট পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কমিটি অবৈধ ও সাংগঠনিক পরিপন্থী দাবি করেন মোজাফফর আলী মুসা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই দুটি সংবাদ সম্মেলনকে বেআইনী ও প্রতারণা উল্লেখ করে এবং নিজেদের বৈধ কমিটি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শামসুল হক পক্ষ। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে জেলা শহরের স্বর্ণকুঠির মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় তাঁদের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন শামসুল হক।
তিনি বলেন- শ্রমিকদলের সংবিধান মোতাবেক উনি (মুসা) ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগে যোগদানের কারণে সভাপতি পদ শূন্য হয়ে যায়। সংবিধ দেয়া ক্ষমতাবলে জেলা কমিটির অধিকাংশ সদস্যে একমত হয়ে আমাকে সভাপতি ঘোষণা করে৷ এছাড়া সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগে যোগদান ও মারা যাওয়ার কারনে ওই পদও শূন্য হয়ে যায়। সংবিধান মোতাবেক সাধারণ সম্পাদক না থাকলে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ওই পদে থাকবে এবং সেই বলে আব্দুল মান্নান শেখ মানাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এই বলেই আমরা কাজ করতেছি এবং জেলা ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের সুপারিশে রেজ্যুলেশন করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি আমাদের আর কোনো নির্দেশনা দেয়নি। অর্থাৎ শ্রমিক দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক আমরা বৈধ কমিটি। এখন মুসা যত বাহানা দিচ্ছে এগুলো প্রতারণা, তাঁর কোনো বৈধতা নেই।
এ সময় তিনি মোজাফফর আলী মুসার আওয়ামীলীগে যোগদানের বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং ও ছবি প্রদর্শন করে বলেন- ২০১৮ সালে সে আওয়ামীলীগে যোগদান করে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে সরাসরি আওয়ামীলীগের পক্ষে কাজ করেছে। সেতো বিএনপির সকল নির্দেশনা অমান্য করেছে।
তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন- “জাল সনদে চাকরি নেয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তি ও চাকরিচ্যূত হোন তিনি। যা সংবিধানের ২৯(২) ধারা অনুযায়ী শ্রমিকদলে তাঁর কোনো সদস্য পদই থাকবে না। কিসের বলে সে দাবি করে, তাঁরতো সাধারণ সদস্য পদও নেই। সে কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু লোককে প্রভাবিত করে এসব করতেছ।”
এছাড়া ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ৪০ টন চাউল আত্মসাৎ, শ্রমিকদের মাঝে বিতরণের জন্য ৩০০টি রিক্সা আত্মসাতের বিষয় তুলে ধরেন।
এ সময় এই পক্ষের সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান শেখ মানা, আব্দুস সাত্তার জোদ্দার, রউফুন আলম লিমন, এমএ মজিদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মোজাফফর আলী মুসা নতুন এই কমিটিকে স্বঘোষিত কমিটি হিসেবে উল্লেখ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন- “তাঁদেরতো কেন্দ্রের কোনো অনুমতিই নেই। কিভাবে বৈধতা দাবি করে।” আওয়ামীলীগে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন- ওরাতো পাগলের মতো অনেক কথাই বলবে।