ঢাকা ১১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফমেক হাসপাতালে কর্মবিরতিতে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা, ভোগান্তিতে রোগীরা বৈষম্য নয়, বাস্তবায়নের দাবি এমপিওভূক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ইসলামী দলগুলোর পাথর দিয়ে মানুষ মারা ও চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির বদনাম নাই: জনসভায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ফরিদপুরে বাইসো-এর কর্মশালা: কৌতুহলবশত সাইবার অপরাধে জড়াচ্ছে যুবসমাজ ফরিদপুরে দুর্বৃত্তদের দিয়ে বসতঘর ভাঙচুর, ভিডিও করায় সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত কোটালিপাড়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান  ফরিদপুরে ও রাজবাড়ীতে পূজামন্ডপে র‍্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা নিয়ে ব্রিফিং, গুজব নিয়ে হুশিয়ারি সালথায় জামায়াতে ইসলামী’র বিক্ষোভ সমাবেশ দেশে খুন হচ্ছে বিচার হচ্ছে না হাতপাখায় ভোট দিলে দেশ নিরাপদে থাকবে : – মুফতী ফয়জুল করীম ফরিদপুরে গ্রামীণ ফুটবল খেলায় ম্যাচসেরাকে গাছের চারা উপহার, মাতলো হাজারো দর্শক

সালথা-মুকসুদপুরের কুমার নদ:

সেতু না থাকায় যুগ যুগ দুর্ভোগে দুই উপজেলার হাজারো বাসিন্দা

শ্রাবণ হাসান




 

ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেষা দুই উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদের ওপর কোনো সেতু না হওয়ায় যুগ যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতু না থাকায় বাশের সাঁকো ও নৌকা তাঁদের ভরসা। ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়রা সহ এ দুটি উপজেলার অন্তত দশ গ্রামবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়- ফরিদপুরের সালথা ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। এই নদের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া ও মুকসুদপুর উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া গ্রামের সংযোগ রয়েছে একটি বাশের সাঁকোর মাধ্যমে। যার একপাড়ে কুমার নদ সংলগ্ন রয়েছে কামারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

কুমার নদ বেষ্টিত দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। সালথা উপজেলার ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী উপজেলার শহর মুকসুদপুর। এই উপজেলা শহরেই উৎপাদিত কৃষি ফসল বিক্রিসহ নিত্যদিনের যোগাযোগ রয়েছে তাঁদের। এছাড়া মুকসুদপুরের কৃষ্ণাদিয়া গ্রামের গ্রামের নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রয়েছে কামারদিয়া গ্রামে। এই বাঁশের সাঁকোই তাঁদের ভরসা। সাঁকোর অদূরে খেয়াঘাট রয়েছে। এই খেয়াঘাটে নৌকায় পারাপার হয়ে থাকেন অনেকে।



এসব এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  পরিবহন সমস্যার কারণে উৎপাদিত কৃষি পণ্য নদী পাড়ি দিয়ে শহরে বিক্রিতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে স্থানীয় কৃষক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। ভয়ে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। কেউ অসুস্থ  হয়ে পড়লে নদী পাড়ি দিয়ে শহরে নিয়ে চিকিৎসা করানো কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই এখানে বড় সমস্যা। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে ছেলে মেয়েদের ভালো ঘরে বিয়ে হয় না বলে জানান স্থানীয়রা।

তাঁদের দাবি, এখানে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে বদলে যাবে অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। উন্নত হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে আসবে স্বস্তি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর পার হতে হবে না কুমার নদ।

খেয়া ঘাটের মাঝি জমির মিয়া জানান, ঝড় বৃষ্টি ছাড়াও সামান্য বাতাসের নৌকা পারাপার বন্ধ থাকে। এছাড়া ঘন কচুরিপানার কারণে চলাচলের পথ বন্ধ হয়েও মাঝেমধ্যে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। এখন প্রায় সব জায়গাই ব্রিজ হয়ে গেছে। শুধু এখানেই হলো না। এখানে ব্রিজ হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে বেঁচে যেত।

বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, দুই উপজেলার বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ সেতু নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। এখানে ব্রিজ নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পাশের এলাকায়।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাফর মিয়া বলেন, ওই স্থানে আইডিভুক্ত রাস্তা নেই, তারপরও আমি আমার সাব সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠাবো, দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৩:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
১৯৪ বার পড়া হয়েছে

সালথা-মুকসুদপুরের কুমার নদ:

সেতু না থাকায় যুগ যুগ দুর্ভোগে দুই উপজেলার হাজারো বাসিন্দা

আপডেট সময় ০৩:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫




 

ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেষা দুই উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদের ওপর কোনো সেতু না হওয়ায় যুগ যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতু না থাকায় বাশের সাঁকো ও নৌকা তাঁদের ভরসা। ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়রা সহ এ দুটি উপজেলার অন্তত দশ গ্রামবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়- ফরিদপুরের সালথা ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। এই নদের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া ও মুকসুদপুর উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া গ্রামের সংযোগ রয়েছে একটি বাশের সাঁকোর মাধ্যমে। যার একপাড়ে কুমার নদ সংলগ্ন রয়েছে কামারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

কুমার নদ বেষ্টিত দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। সালথা উপজেলার ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী উপজেলার শহর মুকসুদপুর। এই উপজেলা শহরেই উৎপাদিত কৃষি ফসল বিক্রিসহ নিত্যদিনের যোগাযোগ রয়েছে তাঁদের। এছাড়া মুকসুদপুরের কৃষ্ণাদিয়া গ্রামের গ্রামের নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রয়েছে কামারদিয়া গ্রামে। এই বাঁশের সাঁকোই তাঁদের ভরসা। সাঁকোর অদূরে খেয়াঘাট রয়েছে। এই খেয়াঘাটে নৌকায় পারাপার হয়ে থাকেন অনেকে।



এসব এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  পরিবহন সমস্যার কারণে উৎপাদিত কৃষি পণ্য নদী পাড়ি দিয়ে শহরে বিক্রিতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে স্থানীয় কৃষক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। ভয়ে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। কেউ অসুস্থ  হয়ে পড়লে নদী পাড়ি দিয়ে শহরে নিয়ে চিকিৎসা করানো কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই এখানে বড় সমস্যা। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে ছেলে মেয়েদের ভালো ঘরে বিয়ে হয় না বলে জানান স্থানীয়রা।

তাঁদের দাবি, এখানে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে বদলে যাবে অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। উন্নত হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে আসবে স্বস্তি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর পার হতে হবে না কুমার নদ।

খেয়া ঘাটের মাঝি জমির মিয়া জানান, ঝড় বৃষ্টি ছাড়াও সামান্য বাতাসের নৌকা পারাপার বন্ধ থাকে। এছাড়া ঘন কচুরিপানার কারণে চলাচলের পথ বন্ধ হয়েও মাঝেমধ্যে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। এখন প্রায় সব জায়গাই ব্রিজ হয়ে গেছে। শুধু এখানেই হলো না। এখানে ব্রিজ হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে বেঁচে যেত।

বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, দুই উপজেলার বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ সেতু নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। এখানে ব্রিজ নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পাশের এলাকায়।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাফর মিয়া বলেন, ওই স্থানে আইডিভুক্ত রাস্তা নেই, তারপরও আমি আমার সাব সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠাবো, দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।